,

প্রায় ২ বছরেও কমিটি না হওয়ায় তৈরি হচ্ছে গ্রুপিং

জুয়েল চৌধুরী ॥ কাউন্সিলের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পরও গতি আসেনি ছাত্রদলে। বিএনপির ‘ভ্যানগার্ড’ খ্যাত এ সংগঠনটির কার্যক্রম এখন অনেকটাই মন্তর। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনসহ জনগুরুত্বপূর্ণ সব ইস্যুতেই রাজপথে কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ সংগঠনটি। জানা গেছে, সারা দেশে ১১৭টি ইউনিটের বেশিরভাগই মেয়াদোত্তীর্ণ। এর মাঝে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের কমিটিও রয়েছে। ফলে এখনও জেলা ছাত্রদলের পূণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি। আর তাই নামকাওয়াস্তে মিছিল-মিটিং ছাড়া নেতাকর্মীদের তেমন একটা রাজপথে দেখা যায় না। ফলে জেলার নেতাদের নির্দেশ অনেক ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ‘চেইন অব কমান্ড’ নেই বললেই চলে। আর এ জন্য মূলত কমিটি ঘোষণা না হওয়াকেই দায়ী করছেন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ছাত্রদলের কমিটিতে প্রার্থী হওয়া নেতাকর্মীরা। এ কারণে অনেক নেতাকর্মীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলছেন, মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে ঠিকই। উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণার পর আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলা কমিটি ঘোষণা করা হবে। তবে এরকম দীর্ঘসূত্রিতা মেনে নিতে পারছেন না ছাত্রদলের পদ প্রত্যাশী প্রার্থীরা। অনেকেই বলছেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জেলা কমিটি ঘোষণা এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্ব বা তাদের কমান্ড তারা মেনে নিতে পারছেন না। আর এ কারণেই অনেকটা গতি হারিয়েছে জেলা ছাত্রদল। যারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী তাদের এমন অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কমিটি না হওয়ায় তারা হতাশ। তারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে একই কমিটি থাকায় একটি গ্যাপের সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক গ্রুপ তৈরি হয়েছে। তাই যারা আন্দোলন করছেন তাদের দাবিতেও যুক্তি আছে। সুতরাং, হাইকমান্ড তাদের দাবি মেনে নিয়ে স্বল্পসময়ের জন্য কমিটি ঘোষণা দিলে সমস্যার সমাধান হয়। জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক রুবেল আহমেদ চৌধুরীকে দিয়ে ২ বছর মেয়াদি কমিটি ঘোষণা করা হয়। ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর কমিটি বিলুপ্তি হয়। কিন্তু এরপর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও নতুন কমিটি ঘোষণা হচ্ছে না। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান আহমেদ জানান, কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে ঠিকই। কেন্দ্রীয়ভাবে ঘোষণা না আসায় এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। অচিরেই কমিটি ঘোষণা করা হবে। তিনি দাবি করেন ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর নয়, এ বছরের ১৮ অক্টোবর কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক রুবেল আহমদ চৌধুরী বলেন, কমিটির মেয়াদ শেষ ঠিকই। আমিও চাই নতুন কমিটি দেয়া হউক এবং নতুন করে যারা নেতৃত্বে আসবেন তাদেরকে তিনি সহযোগিতা করবেন বলে জানান। জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব আহমেদ রিংগনও চান ছাত্রদলে নতুন নেতৃত্ব আসুক। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী মোঃ জিল্লুর রহমান ও হাফিজুল ইসলাম হাফিজ বলেন, ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর কমিটির মেয়াদ শেষ। কিন্তু তারপরও কমিটি দেয়া হচ্ছে না। আমরা চাই কমিটি দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আসুক। নতুন নেতৃত্ব এলে আন্দোলনে গতি আসবে। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জি কে ঝলক ও গোলাম মাহবুব বলেন, বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ছিলাম। রাজপথের আন্দোলনে বারবার পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছি। কয়েকবার কারাবরণও করতে হয়েছে। অথচ নতুন কমিটি দেয়া হচ্ছে না। আমরা পুরাতন নেতৃত্ব মানিনা। আশা করি অচিরেই কমিটি ঘোষণা করে আমাদের মূল্যায়ন করা হবে। আমরা নির্বাচিত হলে দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন বেগবান করবো। একই সঙ্গে কেন্দ্র থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত সংগঠনকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করবো। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল ও সিলেট বিভাগের টিম লিডার ওমর ফারুক কাওছার জানান, উপজেলা কমিটি ঘোষণা করা হচ্ছে। এরপর ইউনিয়ন কমিটি করা হবে। এর পর জেলা কমিটি দেয়া হবে। হতাশ হওয়ার কিছু নেই।


     এই বিভাগের আরো খবর